থ্যালাসেমিয়া কী? এই রোগের ভুগছেন কি না বুঝবেন যে লক্ষণে

সংগৃহীত ছবি

 

থ্যালাসেমিয়া এক ধরনের রক্তশূন্যতা। যা বংশগতভাবে বিস্তার লাভ করে। এমন রোগীর শরীরে স্বাভাবিক প্রক্রিয়ায় হিমোগ্লোবিন তৈরির হার কমে যায়। আর কতটা কমবে তা নির্ভর করে দুটি জিনের উপর। যা বাবা ও মায়ের জিন থেকে সন্তানের শরীরে আসে।

 

এটি প্রধানত দু’ধরনের। আলফা থ্যালাসেমিয়া ও বিটা থ্যালাসেমিয়া। এর মধ্যে বিটা থ্যালাসেমিয়া বেশি গুরুতর। অন্যদিকে আলফা থ্যালাসেমিয়ার তীব্রতা কম হলেও এতে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা বেশি। বিশ্বে প্রতি বছর প্রায় ১ লাখ শিশু থ্যালাসেমিয়া নিয়ে জন্মগ্রহণ করে।

 

যদি হিমোগ্লোবিন তৈরির একটি জিন ভালো ও অন্যটি খারাপ থাকে তাহলে হিমোগ্লোবিন স্বাভাবিকের চেয়ে ১০-৫০ শতাংশ কম তৈরি হয়। এ ধরনের রোগীকে থ্যালাসেমিয়া মাইনর বা হেটারোজিয়াস স্টেট বলে।

এদের ক্ষেত্রে রোগের লক্ষণ কম মাত্রায় প্রকাশ পায়। এ কারণে সহজে থ্যালাসেমিয়া ধরা পড়ে না। এমন রোগীদেরকে থ্যালাসেমিয়া ট্রেইট বা কেরিয়ার বলে।

 

আর যাদের দুটি জিনই খারাপ অর্থাৎ মা ও বাবা উভয়ই থ্যালাসেমিয়া ট্রেইট, তাদের মধ্যে রোগের লক্ষণসমূহ শিশুকালেই প্রকাশ পায়। ফলে তাদের রোগ নির্ণয় দ্রুত হয়।

 

এদেরকে থ্যালাসেমিয়া মেজর বা হোমোজিয়াস স্টেট কিংবা থ্যালাসেমিয়া ইন্টারমেডিয়া বলা হয়। বাংলাদেশে হিমোগ্লোবিন-ই ও হিমোগ্লোবিন বিটা থ্যালাসেমিয়া ট্রেইটের প্রকোপ বেশি।

 

জেনে নিন থ্যালাসেমিয়া রোগের লক্ষণসমূহ-

> রক্তস্বল্পতা বা অ্যানিমিয়া
>> ত্বক হলুদ হয়ে যাওয়া বা জন্ডিস
>> দেহে অতিরিক্ত আয়রন জমা হওয়া
>> সংক্রমণ
>> স্প্লিন বা প্লীহা বড় হয়ে যাওয়া
>> অবসাদগ্রস্ততা
>> দুর্বলতা ও অস্বস্তি
>> শ্বাসকষ্ট
>> মুখের হাড়ের বিকৃতি, মুখে অস্বাভাবিক পরিবর্তন
>> শারীরিক বৃদ্ধি কমে যাওয়া
>> পেট বেড়ে যাওয়া
>> প্রস্রাব গাঢ় রংয়ের হওয়া
>> হৃৎপিণ্ডের সমস্যা ইত্যাদি।

 

থ্যালাসেমিয়া নির্ণয়

বিটা থ্যালাসেমিয়া নির্ণয়ের ক্ষেত্রে চিকিৎসক আপনার লোহিত রক্ত কণিকার আকার পরীক্ষা করার পরামর্শ দেবেন। এটি আপনার সম্পূর্ণ রক্তকণিকা গণনার (সিবিসি) মিন কর্পাস্কুলার ভলিউমের (এমসিভি) মাধ্যমে দেখানো হয়।

যদি আপনার এমসিভি রিডিং ৮০ বা তার কম হয় ও আপনার লোহার ঘাটতি না থাকে তাহলে বিটা থ্যালাসেমিয়ার প্রলক্ষণ থাকতে পারে।

হিমোগ্লোবিন ইলেক্ট্রোফোরেসিস, কোয়ান্টিটেটিভ হিমোগ্লোবিন এ ২ ও কোয়ান্টিটেটিভ হিমোগ্লোবিন এফ পরীক্ষার মাধ্যমেও বিটা থ্যালাসেমিয়ার প্রলক্ষণ আছে কিনা তা জানা যায়।

 

আজ বিশ্ব থ্যালাসেমিয়া দিবস। রোগটি সম্পর্কে জনসচেতনতা বাড়াতে সারাবিশ্বের মতো সোমবার (৮ মে) দেশে পালিত হচ্ছে ‘বিশ্ব থেলাসেমিয়া দিবস-২০২৩।’

 

আন্তর্জাতিক থেলাসেমিয়া ফেডারেশন এবারের প্রতিপাদ্য নির্ধারণ করেছে- ‘বি অ্যাওয়ার, শেয়ার কেয়ার থ্যালাসেমিয়া: স্ট্রেংদেনিং এডুকেশন টু ব্রিজ দ্য থেলাসেমিয়া কেয়ার গ্যাপ।’ যার অর্থ হলো ‘থেলাসেমিয়া সম্পর্কে নিজে জানি, যত্নবান হই ও সেবার গ্যাপ পূরণে জ্ঞান অর্জন করি।’

সূত্র: থ্যালাসেমিয়া ডট অর্গ

Facebook Comments Box

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ



সর্বশেষ আপডেট



» সাভারে তিন সড়কে যানজট, ভোগান্তিতে ঘরমুখো মানুষ

» শসার দামে সেঞ্চুরি

» দুর্নীতিবাজরা নেই, তাই গরুর দাম কম : স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা

» দেশীয় অস্ত্র ও বিভিন্ন সরঞ্জামসহ যুবক গ্রেফতার

» সাবিলা-ফারিণ নায়িকা হিসেবে ‘পারফেক্ট নয়’ শুনে যা বললেন মেহজাবীন

» ১০ দিন বন্ধ থাকবে সোনাহাট স্থলবন্দর

» কেন তাকে সভাপতির পদ থেকে সরানো হলো জানালেন ফারুক

» কানাডায় ঈদুল আজহা শুক্রবার

» চিলির বিপক্ষে খেলবেন মেসি?

» ঈদের দিন যেসব কর্মসূচি পালন করবে বিএনপি

  
উপদেষ্টা -মাকসুদা লিসা
 সম্পাদক ও প্রকাশক :মো সেলিম আহম্মেদ,
ভারপ্রাপ্ত,সম্পাদক : মোঃ আতাহার হোসেন সুজন,
ব্যাবস্থাপনা সম্পাদকঃ মো: শফিকুল ইসলাম আরজু,
নির্বাহী সম্পাদকঃ আনিসুল হক বাবু

 

 

আমাদের সাথে যোগাযোগ করুন:ই-মেইল : [email protected]

মোবাইল :০১৫৩৫১৩০৩৫০

Desing & Developed BY PopularITLtd.Com
পরীক্ষামূলক প্রচার...

থ্যালাসেমিয়া কী? এই রোগের ভুগছেন কি না বুঝবেন যে লক্ষণে

সংগৃহীত ছবি

 

থ্যালাসেমিয়া এক ধরনের রক্তশূন্যতা। যা বংশগতভাবে বিস্তার লাভ করে। এমন রোগীর শরীরে স্বাভাবিক প্রক্রিয়ায় হিমোগ্লোবিন তৈরির হার কমে যায়। আর কতটা কমবে তা নির্ভর করে দুটি জিনের উপর। যা বাবা ও মায়ের জিন থেকে সন্তানের শরীরে আসে।

 

এটি প্রধানত দু’ধরনের। আলফা থ্যালাসেমিয়া ও বিটা থ্যালাসেমিয়া। এর মধ্যে বিটা থ্যালাসেমিয়া বেশি গুরুতর। অন্যদিকে আলফা থ্যালাসেমিয়ার তীব্রতা কম হলেও এতে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা বেশি। বিশ্বে প্রতি বছর প্রায় ১ লাখ শিশু থ্যালাসেমিয়া নিয়ে জন্মগ্রহণ করে।

 

যদি হিমোগ্লোবিন তৈরির একটি জিন ভালো ও অন্যটি খারাপ থাকে তাহলে হিমোগ্লোবিন স্বাভাবিকের চেয়ে ১০-৫০ শতাংশ কম তৈরি হয়। এ ধরনের রোগীকে থ্যালাসেমিয়া মাইনর বা হেটারোজিয়াস স্টেট বলে।

এদের ক্ষেত্রে রোগের লক্ষণ কম মাত্রায় প্রকাশ পায়। এ কারণে সহজে থ্যালাসেমিয়া ধরা পড়ে না। এমন রোগীদেরকে থ্যালাসেমিয়া ট্রেইট বা কেরিয়ার বলে।

 

আর যাদের দুটি জিনই খারাপ অর্থাৎ মা ও বাবা উভয়ই থ্যালাসেমিয়া ট্রেইট, তাদের মধ্যে রোগের লক্ষণসমূহ শিশুকালেই প্রকাশ পায়। ফলে তাদের রোগ নির্ণয় দ্রুত হয়।

 

এদেরকে থ্যালাসেমিয়া মেজর বা হোমোজিয়াস স্টেট কিংবা থ্যালাসেমিয়া ইন্টারমেডিয়া বলা হয়। বাংলাদেশে হিমোগ্লোবিন-ই ও হিমোগ্লোবিন বিটা থ্যালাসেমিয়া ট্রেইটের প্রকোপ বেশি।

 

জেনে নিন থ্যালাসেমিয়া রোগের লক্ষণসমূহ-

> রক্তস্বল্পতা বা অ্যানিমিয়া
>> ত্বক হলুদ হয়ে যাওয়া বা জন্ডিস
>> দেহে অতিরিক্ত আয়রন জমা হওয়া
>> সংক্রমণ
>> স্প্লিন বা প্লীহা বড় হয়ে যাওয়া
>> অবসাদগ্রস্ততা
>> দুর্বলতা ও অস্বস্তি
>> শ্বাসকষ্ট
>> মুখের হাড়ের বিকৃতি, মুখে অস্বাভাবিক পরিবর্তন
>> শারীরিক বৃদ্ধি কমে যাওয়া
>> পেট বেড়ে যাওয়া
>> প্রস্রাব গাঢ় রংয়ের হওয়া
>> হৃৎপিণ্ডের সমস্যা ইত্যাদি।

 

থ্যালাসেমিয়া নির্ণয়

বিটা থ্যালাসেমিয়া নির্ণয়ের ক্ষেত্রে চিকিৎসক আপনার লোহিত রক্ত কণিকার আকার পরীক্ষা করার পরামর্শ দেবেন। এটি আপনার সম্পূর্ণ রক্তকণিকা গণনার (সিবিসি) মিন কর্পাস্কুলার ভলিউমের (এমসিভি) মাধ্যমে দেখানো হয়।

যদি আপনার এমসিভি রিডিং ৮০ বা তার কম হয় ও আপনার লোহার ঘাটতি না থাকে তাহলে বিটা থ্যালাসেমিয়ার প্রলক্ষণ থাকতে পারে।

হিমোগ্লোবিন ইলেক্ট্রোফোরেসিস, কোয়ান্টিটেটিভ হিমোগ্লোবিন এ ২ ও কোয়ান্টিটেটিভ হিমোগ্লোবিন এফ পরীক্ষার মাধ্যমেও বিটা থ্যালাসেমিয়ার প্রলক্ষণ আছে কিনা তা জানা যায়।

 

আজ বিশ্ব থ্যালাসেমিয়া দিবস। রোগটি সম্পর্কে জনসচেতনতা বাড়াতে সারাবিশ্বের মতো সোমবার (৮ মে) দেশে পালিত হচ্ছে ‘বিশ্ব থেলাসেমিয়া দিবস-২০২৩।’

 

আন্তর্জাতিক থেলাসেমিয়া ফেডারেশন এবারের প্রতিপাদ্য নির্ধারণ করেছে- ‘বি অ্যাওয়ার, শেয়ার কেয়ার থ্যালাসেমিয়া: স্ট্রেংদেনিং এডুকেশন টু ব্রিজ দ্য থেলাসেমিয়া কেয়ার গ্যাপ।’ যার অর্থ হলো ‘থেলাসেমিয়া সম্পর্কে নিজে জানি, যত্নবান হই ও সেবার গ্যাপ পূরণে জ্ঞান অর্জন করি।’

সূত্র: থ্যালাসেমিয়া ডট অর্গ

Facebook Comments Box

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ



  
উপদেষ্টা -মাকসুদা লিসা
 সম্পাদক ও প্রকাশক :মো সেলিম আহম্মেদ,
ভারপ্রাপ্ত,সম্পাদক : মোঃ আতাহার হোসেন সুজন,
ব্যাবস্থাপনা সম্পাদকঃ মো: শফিকুল ইসলাম আরজু,
নির্বাহী সম্পাদকঃ আনিসুল হক বাবু

 

 

আমাদের সাথে যোগাযোগ করুন:ই-মেইল : [email protected]

মোবাইল :০১৫৩৫১৩০৩৫০

Design & Developed BY ThemesBazar.Com